April 20, 2024, 5:49 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল

দুর্নীতির বিষয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ নয়: প্রধান বিচারপতি

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
সদ্যনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, দুর্নীতি একটি ক্যান্সার। এ বিষয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ নয়।
রোববার (২ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, দুর্নীতি যেই করুক আমার কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেও তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এছাড়া বিচার বিভাগে কোনো দুষ্টচক্রকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
রবিবার সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন। সর্বোচ্চ আদালতের ১নং বিচার কক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
বিচার বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, দুর্নীতি ক্যান্সারের মতো। আঙ্গুলে ক্যান্সার হলে যেমন কেটে ফেলতে হয়, দুর্নীতিও তেমনি। দুর্নীতির বিষয়ে নো কম্প্রোমাইজ।
‘দুর্নীতির ব্যাপারে আমি কোনো কপ্রোমাইজ করবো না। কোনো রকম দুর্নীতি হলে আমি সঙ্গে সঙ্গে স্টাফ, অফিসার যেই হোক না কেন সাসপেন্ড করবো।’-বলেন হাসান ফয়েজ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগের সমস্যা চিহ্নিত করে তা দূর করতে পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি। আর এ কাজে বিচার বিভাগকে সহযোগিতা করতে রাষ্ট্রের সকল বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ন্যায় বিচার নিশ্চিতে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ভূলন্ঠিত হবে।
মামলার জট কমানো, বিচার বিভাগ থেকে দুর্নীতি দুর করা, বার ও বেঞ্চের মধ্যে সমন্বয় কাজ করার কথা ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি।
এর আগে রীতি অনুসারে প্রধান বিচারপতিকে সংবর্ধনা প্রদান করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। সংবর্ধনা শেষে বক্তব্য দেন হাসান ফয়েজ।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিচার কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই অভিপ্রায় জানাতে চাই যে বিচার বিভাগে কোনো দুষ্ট ক্ষতকে আমরা ন্যূনতম প্রশ্রয় দেব না। দুর্নীতি একটি ক্যানসার। কোনো আঙুলে যদি ক্যানসার হয়, সর্বোত্তম পন্থা হচ্ছে, আঙুলটি কেটে ফেলা। দুর্নীতির ব্যাপারে আমি কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। চিহ্নিত হলে সঙ্গে সঙ্গে স্টাফ বা অফিসার যে-ই হোক না কেন, সাসপেন্ড করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের সব শাখার অস্বচ্ছতা, অনিয়ম ও অযোগ্যতাকে নির্মূল করতে সবাইকে পাশে পাব—এই আশা ব্যক্ত করছি।’
মামলাজট নিরসন, বিচারপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা-গতিশীলতা আনা ও অনিয়ম অনুসন্ধানে পৃথক কমিটি গঠন করার কথাও বলেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘দেশের সব অধস্তন আদালতে মামলাজট নিরসন ও বিচারপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা-গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে আটটি বিভাগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতিকে প্রধান করে একটি করে মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। প্রতি মাসে তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতিবেদন গ্রহণ করা হবে। পুরোনো মামলাগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে নিষ্পত্তির বিষয়ে সুপারভাইজ ও মনিটরিং করা হবে।’
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, সুপ্রিম কোর্টে, হাইকোর্ট বিভাগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-সংক্রান্ত অভিযোগগুলো সঙ্গে সঙ্গে প্রাথমিক অনুসন্ধানের জন্য একটি প্রিলিমিনারি ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করা হবে।
নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘বার ও বেঞ্চ হলো একটি পাখির দুটি ডানা। আর জুডিশিয়ারি হলো সমস্ত দেহ। পাখা দুটি সমানভাবে শক্তিশালী করার মাধ্যমে এই দেশের সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যেতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। বারের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই কোর্ট পরিচালনা করা সম্ভব নয়।’
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিচার বিভাগের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে যত দূর সম্ভব সমাধানে পদক্ষেপ নিতে হবে। যে জাতি অসীম সাহসিকতার সঙ্গে জীবনকে বাজি রেখে তার শৃঙ্খল ছিন্ন করতে পারে, সে জাতি বিচার বিভাগের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না, এটি আমার বিশ্বাস হয় না। আমি বরাবর আশাবাদী মানুষ।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগে অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করলে সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারব ইনশা আল্লাহ। রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের একটি অঙ্গ দুর্বল বা সমস্যাগ্রস্ত হলে রাষ্ট্র শক্তিশালী হতে পারে না। এ কারণে আমি বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রের অপর দুটি বিভাগ তাদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে বিচার বিভাগের সমস্যা সমাধানে দৃশ্যমান ও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, মনে রাখতে হবে যে ন্যায়বিচার জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া জনগণের প্রতি দয়া নয়, বরং এটি তাদের সহজাত অধিকার। দেশের সব বিচারককে নিরপেক্ষতার সঙ্গে, নির্ভয়ে ও স্বাধীনভাবে মানুষের ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির সহজাত অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সীমিত সম্পদ ও সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে, বিচারিক সময় ও দক্ষতার পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিতে প্রত্যেক বিচারককে মামলা নিষ্পত্তিতে অভূতপূর্ব অভিযাত্রায় অগ্রসেনানী হওয়ার এক ইতিবাচক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, আইন কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন..


Leave a Reply

Your email address will not be published.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
22232425262728
2930     
       
    123
       
   1234
26272829   
       
293031    
       
    123
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2021 dainikkushtia.net
Design & Developed BY Anamul Rasel