December 13, 2024, 2:28 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক, দৌলতপুর/ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অবৈধ সব ইটভাটায় অবাঁধে কাঠ পুড়ানো হলেও প্রশাসন রয়েছে নীরব। সরকারী ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রন আইন না মেনে উপজেলার ২৬টি ইঁভাটার প্রায় সবগুলিতে দেদারসে পুড়ানো হচ্ছে কয়লার পরিবর্তে জ্বালানী কাঠ বা কাঠের গুড়ি। এরফলে উজাড় হচ্ছে সবুজ বৃক্ষ। উপজেলার বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকাধীন বনাঞ্চল থেকে গাছ কিনে এসব অসাধু ভাটা মালিকরা জ্বালানী হিসেবে কাঠের ব্যবহার করছে। আর এসব ইটভাটাগুলো থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় দূষিত হয়ে বিপর্যস্থ হচ্ছে চারপাশের পরিবেশ। এতে একদিকে যেমন উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল অপরদিকে পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ছে হুমকির মুখে। দৌলতপুর উপজেলার হাসপাতাল রোডের সরকারী শেখ ফজিলাতুনেছা মুজিব মহিলা কলেজ সংলগ্ন স্থানে গড়ে ওঠা ৪টি ইটভাটাসহ কল্যানপুর, ডাংমড়কা, মানিকদিয়াড়, সাদীপুর, রিফায়েতপুর, চকদৌলতপুর, রিফাইতপুর, সোনাইকান্দি, ঝাউদিয়া, সংগ্রামপুর, বড়গাংদিয়া, বোয়ালিয়া, স্বরুপপুর ও প্রাগপুর এলাকার সব ইটভাটায় হাজার হাজার মন গাছের গুড়ির ¯ুÍপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। শুধু তাই নয় উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় ছোট-বড় ৯টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটাতেও কয়লার পরিবর্তে পুড়ানো হচ্ছে বনাঞ্চলের সবুজ বৃক্ষ।
দৌলতপুর উপজেলার সদরে স্বরুপপুর, মানিকদিয়াড় ও সাদীপুর এলাকার ইটভাটাসহ সব ইটভাটাতে অবাঁধে কাঠ পুড়ানো হলেও প্রশাসন রয়েছে নীরব। উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন লতিবমোড়ে প্রতিদিন প্রকাশ্যেই ট্রাকভর্তি জ্বালানী কাঠ ওজন দেওয়া হচ্ছে। আর এসব নিষিদ্ধ ইটভাটায় ফসলী জমি থেকে মাটি কেটে সেই মাটি দিয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে ইট। প্রতিটি ভাটায় এক রাউন্ড ইট পুড়াতে সময় লাগে ১২-১৫ দিন। সে হিসেবে একটি মৌসুমে প্রায় ১০ থেকে ১২ রাউন্ড ইট পুড়ানো সম্ভব। এক রাউন্ড ইট পুড়াতে ১০ থেকে ১২ হাজার মন জ্বালানী কাঠের প্রয়োজন হয়। সে অনুযায়ী প্রতিটি ইটভাটায় এক মৌসুমে একলক্ষ মণ জ্বালানী হিসেবে সবুজ বৃক্ষ বা কাঠ পুড়ানো হলে ২৬টি ইটভাটায় প্রায় ২৬ লক্ষ মন বা তারও বেশী কাঠ পুড়ানো হবে। এছাড়াও ইটভাটাগুলো সরকারী নিয়ম নীতি না মেনে যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মত উর্বর ফসলী জমি ও জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠায় ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় শিশুদের শ্বাসকষ্ট ও স্বাস্থ্যহানী ঘটছে, পরিবেশ হচ্ছে বিপর্যস্থ। সেই সাথে আবাদী জমি ক্রমাগত হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি জমির উর্বর শক্তি হারাচ্ছে।
তবে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বেশ কয়েকটি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে জ্বালানী কাঠ পোড়ানোর দায়ে অর্থদন্ড ও ভাটা মালিকদের সতর্ক করলেও ইটভাটা মালিকরা তা না মেয়ে অবাঁধ পূর্বের ধারাবাহিকতায় কাঠ পুড়িয়ে যাচ্ছে। তাই বিষয়টি জরুরী ভিত্তিতে প্রশাসনের নজরে নেওয়া প্রয়োজন বলে ভূক্তভোগীদের দাবি। একই সাথে পরিবেশ ও আবাদী জমি রক্ষায় এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী বলে সচেতন মহলের দাবি।
Leave a Reply