December 12, 2024, 12:44 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
সরকার সারা দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসারদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ফৌজদারি কার্যবিধির আলোকে তাদের এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যা গতকাল থেকেই কার্যকর হয়েছে এবং বলবৎ থাকবে আগামী দুই মাস (৬০ দিন)। ক্ষমতানুযায়ী, ১৭টি ধারায় তারা ম্যাজিস্ট্রেসি প্রয়োগ করতে পারবেন।
হাসিনা সরকার পতনের পর দেশজুড়ে নানা অরাজকতা শুরু হয়। থানায় থানায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। আক্রমণের শিকার হন পুলিশ সদস্যরা। আগুন দেয়া হয় থানা ও পুলিশের স্থাপনায়। লুট করা হয় অস্ত্র ও গোলাবারুদ। এরপর থেকে নিজেদের কার্যক্রম বন্ধ রেখে কর্মবিরতিতে যায় পুলিশ। তাদের অনুপস্থিতিতে দেশজুড়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে। তখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তবে এতদিন তাদের বিচারিক ক্ষমতা দেয়া হয়নি।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের তিনদিন পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। নতুন সরকারের সময় কারফিউ না থাকলেও দেশজুড়ে সেনা মোতায়েন থাকে।
দেশে এখনও স্বাভাবিক ফেরেনি। জনমনে এখনও তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিরব চাঁদাবাজি, আগের সরকারের ধারাবাহিকতার মতোই দখলদারিত্ব, লুটপাট মামলা সবই চলছে সমান গতিতে। এমতাবস্থায় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করা হলো।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ (দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর ১৮৯৮)-এর ১২ (১) ও ১৭ ধারা অনুযায়ী সেনা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে অধিক্ষেত্র হিসেবে সমগ্র বাংলাদেশ উল্লেখ করা হয়েছে। তারা কার্যবিধির ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫ (২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারায় বর্ণিত আইন ও অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবেন।
ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তারা অপরাধীকে গ্রেফতার করতে বা গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারবেন। এসব ধারা অনুযায়ী সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় অন্যান্য ব্যবস্থাও নিতে পারবেন। যেমন তল্লাশি পরোয়ানা জারি, অসদাচরণ ও ছোটখাটো অপরাধের জন্য মুচলেকা আদায়, মুচলেকা থেকে অব্যাহতি, বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ, স্থাবর সম্পত্তি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বাধা অপসারণ এবং জনগণের ক্ষতির আশঙ্কা করলে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন ক্ষমতা পাবেন ম্যাজিস্ট্রেসির দায়িত্ব পাওয়া সেনা কর্মকর্তারা।
Leave a Reply