November 12, 2024, 5:06 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দেশে একটি বড় সময় ধরে চলা তাপপ্রবাহের প্রভাব মেহেরপুরে আম ও লিচুর উপর। অন্য বছরের তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষীরা। বিষয়টি স্বীকার করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
চাষী ও বাগান মালিকদের তথ্য মতে, অন্য বছরের তুলনায় এমনিতেই মুকুল এসেছে কম। যতটুকু আম ও লিচুর গুটি মৌসুমের শুরুতে দেখা গিয়েছিল, তাপপ্রবাহে অধিকাংশ ঝরে পড়েছে। গাছে স্প্রে ও সেচ দিয়েও সুফল মিলেনি।
মেহেরপুরের হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই, ফজলিসহ গুটি জাতের আমের সুখ্যাতি রয়েছে। এখানকার উৎপাদিত আম রফতানি করা হয় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। অন্যদিকে বোম্বাই, চায়না ও গুটিসহ বিভিন্ন জাতের লিচুরও চাষ হয় এ জেলায়।
মেহেরপুর কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর আমের বাগান তালিকাভুক্ত হয়েছে। লিচুর বাগান রয়েছে ৭১২ হেক্টরে। এর বাইরেও বিভিন্ন বাড়িতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আম-লিচুর বাগান।
জেলার নিয়মিত আম ও লিচু চাষ করে আসছেন আলমগীর ভ‚ঁইয়া। তিনি জানান, এ বছরে বলেন, তার পাঁচ বিঘা আমের বাগান রয়েছে। দেড় বিঘা জমিতে রয়েছে লিচু। তিনি জানান, আমবাগানের বেশির ভাগ গাছেই এবার আম নেই। কারন তাপপ্রবাহে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। এই কৃষকের লিচুর অবস্থাও করুণ। পর্যাপ্ত লিচু এলেও শেস পর্যন্ত গুটি থাকেনি। ক্ষেত্র বিশেষে, গাছেই শুকিয়ে গেছে লিচু।
তিনি জানান, বোরো মৌসুম হওয়ায় ধানের জমিতে সেচ দেয়া নিয়ে বেশী ব্যস্ত সেচ পাম্প মালিকরা। যদিও অল্প সেচ দেয়ার সুযোগ হচ্ছে। কিন্তু তাপপ্রবাহের কারণে তা কাজে আসেনি।
গাংনী উপজেলার আরেক ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান জানান, ‘মুকুল আসার আগেই প্রতি মৌসুমে তিনি ১৫/২০ বিঘা আমবাগান ক্রয় করে থাকেন। এবার যথাযথভাবে সেচ, সার ও স্প্রে করার পর দেখতে পান গাছে মুকুলই আসেনি। লোকসানের প্রবল তাকে প্রতিমুর্হুত তাড়া করে ফিরছে। এছাড়া এবার তার লিচুর বাগান ক্রয় করা ছিল প্রায় পাঁচ বিঘা। সেখানে কিছু ফল এলেও অতিরিক্ত তাপে গুটি ঝরে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, ‘মেহেরপুর ফল উৎপাদনের দিক দিয়ে বরাবরই উন্নত মাটির জেলা। তার হিসেব মতে, অন্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রথম দিকে প্রায় ৩০ শতাংশ গাছে আমের মুকুল আসেনি। উৎপাদন সেই পরিমাণ কম হবে।
যে সমস্যায় কৃষকরা পড়েছেন সেটা দেশজুড়েই বলে জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন তার দপ্তর এ বিষয়ে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
Leave a Reply