April 20, 2024, 2:56 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল

জেলা পরিষদ নির্বাচন/ কুষ্টিয়াসহ সারা দেশে অর্ধেক প্রার্থীই পরিবর্তন করেছে আ.লীগ

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে সারাদেশে প্রায় অর্ধেক সংখ্যক প্রার্থী পরিবর্তন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে ৬০ জেলায় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ঘোষিত চূড়ান্ত সমর্থক তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে— ৬০টি জেলার মধ্যে ২৭টিতে তাদের সমর্থন পরিবর্তন করেছে।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, যেসব জায়গাগুলোতে পরিষদ চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উঠেনি সেসব জায়গায় পরিবর্তন করা হয়নি। অন্যদিকে যেখানে অভিযোগ উঠেছে সেসব জায়গাতে পরিবর্তন করা হয়েছে। সূত্রটি বলছে দলের হাই কমান্ড থেকে এ ধরনের নির্দেশনাও ছিল। এর বাইয়ে বয়সের কারনেও কয়েকজনকে পরিবর্তন করা হয়েছে।
বিভাগ ওয়ারী হিসেব নিলে দেখা যাবে খুলনা বিভাগে তিনটি পরিষদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। মেহেরপুরে মিয়াজান আলীর পরিবর্তে আবদুস সালাম, কুষ্টিয়ায় রবিউল ইসলামের স্থলে সদর উদ্দিন খান, নড়াইলে সৈয়দ আইয়ুব আলীর পরিবর্তে সুবাস চন্দ্র বোস পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সমর্থন। এ বিভাগের সাতক্ষীরা জেলায় দল সমর্থিত কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।
সূত্র বলছে কুষ্টিয়াতে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে অভিযোগ ওঠে। যদিও কোন অভিযোগই এখনও প্রমাণ হয়নি এবং অভিযোগের পরও মেয়াদ শেষে তাকেই প্রশাসক করা হয়েছিল। মনে করা হয়েছিল তিনিই হয়তো বহাল থাকবেন। সূত্র জানায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খান প্রার্থী হওয়ায় রবিউল ইসলামের ভাগ্য ঝুলে যায়। কারন সদর খান দীর্ঘ পরীক্ষিত একজন নেতা। সেই তুলানায় তিনি বারবার চেষ্টা করেও সেভাবে মুল্যায়িত হতে পারেন নি। দলের হাই কমান্ড মনে করে তিনি সহানুভুতি পেতে পারেন। অন্যদিকে, জেলার রাজনীতিরও একটি ধারা এখানে কাজ করে। আগেভাগেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল রবিউল ইসলাম যদি কোন কারনে ফসকে যায় তৎপরবর্তীতেই রাখা হয় সদর উদিন খানকে। যাতে জেলার ঘরোয়া রাজনীতির ধারাটি অব্যাহত থাকে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রার্থী এ বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন নমিনেশন জমা দেয়ার পর থেকে তারও এমন মনে হয়েছিল।
সদর উদ্দিন খানের সাথে কথা বলে জানা গেছে তিনি জেলার আওয়ামী রাজনীতির প্রবীণতম নেতাদের একজন। তিনি কারো প্রতি অনুরাগ বা বিরাগ হয়ে নমিনেশন পত্র জমা দেন নি। তিনি জেলার রাজনীতির ধারা, জেলার উন্নয়নের ধারা ও সর্বোপরি জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে নিজের ভুমিকা পালনের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
জানা যায়, সদর উদ্দিন ২০০৬ সালে কুষ্টিয়া-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের নমিনেশন পান। কিন্তু নির্বাচন না হওয়ায় তার তিনি এগোতে পারেন নি। এরপর উপজেলায় তাকে নমিনেশন দেয়া হয় এবং তিনি পরপর তিনবার চেয়ারম্যান হন। বর্তমানে তিনি এই পদে বহাল রয়েছেন। অন্যদিকে, এরই মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে।
এদিকে রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলা পরিষদে গতবারের আবু বকরের স্থলে এবার আবু তোয়াবুর রহমানকে সমর্থন জানানো হয়েছে। এছাড়া রংপুরে ছাফিয়া খানমের স্থলে ইলিয়াস আহমেদ, গাইবান্ধায় সৈয়দ শামস উল আলম হিরুর পরিবর্তে আবু বকর সিদ্দিককে এবার সমর্থন দিয়েছে দল।
রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলা পরিষদে গতবার সমর্থন পেয়েছিলেন মরহুম মাহবুব জামান। তবে তিনি ওই নির্বাচনে নির্বাচিত হতে পারেননি। এবার রাজশাহী জেলা পরিষদে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন মীর ইকবাল। জয়পুরহাটে আরিফুর রহমান রকেটের স্থলে খাজা শামসুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জে মইন উদ্দিন মণ্ডলের স্থলে রুহুল আমিন এবং পাবনায় রেজাউর রহিম লালের পরিবর্তে আ স ম আব্দুর রহিম পাকন দলের সমর্থন পেয়েছেন।
বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলায় গতবারের দেলোয়ার হোসেনের পরিবর্তে এবার জাহাঙ্গীর কবির, পটুয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে গতবার খান মোশাররফ হোসেন সমর্থন পেয়ে নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুতে মো. খলিলুর রহমান আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে উপনির্বাচনে জয়ী হন। এবারও তিনি দলের সমর্থন পেয়েছেন। বরিশালে মো. মইদুল ইসলামের পরিবর্তে এ কে এম জাহাঙ্গীর, ঝালকাঠিতে সরদার শাহ আলমের পরিবর্তে খান সাইফুল্লাহ পনির, পিরোজপুরে অধ্যক্ষ শাহ আলমের পরিবর্তে সালমা রহমানকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুরে ফারুক আহম্মেদ চৌধুরীর পরিবর্তে মোহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, নেত্রকোনায় প্রশান্ত কুমার পালের পরিবর্তে অজিত কুমার সরকার; ঢাকা বিভাগের গাজীপুরে আখতারুজ্জামানের পরিবর্তে মো. মোতাহার হোসেন, নরসিংদী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে গতবার আসাদুজ্জামান সমর্থন পেয়ে নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুতে আব্দুল মতিন ভুঞা আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে উপনির্বাচনে জয়ী হন। এবারও তিনি দলের সমর্থন পেয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে আনোয়ার হোসেনের পরিবর্তে চন্দন শীল, রাজবাড়ীতে ফকির আব্দুল জব্বারের স্থলে এ কে এম শফিকুল মোরশেদ, ফরিদপুরে গতবার আওয়ামী লীগের সমর্থনে নির্বাচিত লুৎফর রহমান মৃধা মারা গেলে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে শামসুল হক ওরফে ভোলা মাস্টার নির্বাচিত হন। তবে এবার তিনি সমর্থন পাননি। তার স্থলে মোহাম্মদ ফারুক হোসেন সমর্থন পেলেন। গোপালগঞ্জে চৌধুরী এমদাদুল হকের পরিবর্তে মুন্সি আতিয়ার রহমান পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সমর্থন।
এদিকে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জে ইনামুল করিম ইমনের পরিবর্তে খায়রুল কবির রুমেন, সিলেটে লুৎফুর রহমানের স্থলে নাসির উদ্দিন খান; চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলহাজ শফিকুল আলমের পরিবর্তে আল মামুন সরকার, কুমিল্লায় মো. আবু তাহেরের পরিবর্তে মফিজুর রহমান বাবলু, চাঁদপুরে ওচমান গনি পাটোওয়ারীর পরিবর্তে ইউসুফ গাজী, ফেনী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে গতবার আজিজ আহমেদ চৌধুরী সমর্থন পেয়ে নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুতে খায়রুল বশর তপন আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে উপনির্বাচনে জয়ী হন। এবারও তিনি দলের সমর্থন পেয়েছেন। নোয়াখালী এবিএম জাফর উল্ল্যাহর পরিবর্তে আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে গতবার শামসুল ইসলাম সমর্থন পেয়ে নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুতে মো. শাহজাহান আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়ে উপনির্বাচনে জয়ী হন। এবারও তিনি দলের সমর্থন পেয়েছেন। চট্টগ্রামে এম এ সালামের পরিবর্তে এ টি এম পেয়ারুল ইসলামকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছে।
এছাড়া রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁওয়ে সাদেক কোরাইশী, দিনাজপুরে আজিজুল ইমাম চৌধুরী, নীলফামারীতে মমতাজুল হক, লালমনিরহাট মতিয়ার রহমান, কুড়িগ্রাম মো. জাফর আলী; রাজশাহী বিভাগের বগুড়ায় মকবুল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে নওগাঁয় এ কে এম ফজলে রাব্বি, রাজশাহীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, নাটোরে সাজেদুর রহমান খাঁন, সিরাজগঞ্জে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস; খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় মাহফুজুর রহমান মঞ্জু, ঝিনাইদহে কনক কান্তি দাস, মাগুরায় পঙ্কজ কুন্ডু, বাগেরহাটে শেখ কামরুজ্জামান টুকু, খুলনায় শেখ হারুনুর রশীদ গতবারের মত এবারও দলের সমর্থন পেয়েছেন। গত নির্বাচনে যশোরে আওয়ামী লীগের সমর্থনে বিজয়ী চেয়ারম্যান শাহ হাদিউজ্জামান মারা গেলে তার শূন্য পদে সাইফজ্জামান পিকুল দলের সমর্থনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবারও তিনি এ জেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন।
বরিশাল জেলার ভোলায় আব্দুল মোমিন টুলু, ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইলে ফজলুর রহমান খান ফারুক, শেরপুরে চন্দন কুমার পাল, মানিকগঞ্জে গোলাম মহীউদ্দিন, মুন্সীগঞ্জে মো. মহিউদ্দিন, ঢাকায় মো. মাহবুবুর রহমান, শরিয়তপুরে ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, মাদারীপুরে গতবার আওয়ামী লীগের সমর্থনে নির্বাচিত মিয়াজ উদ্দিন খান মারা যাওয়ার পর মুনির চৌধুরী উপনির্বাচনে জয়ী হন। এবারও তিনি দলের সমর্থন পেয়েছেন এ জেলা থেকে। ময়মনসিংহে অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান ও কিশোরগঞ্জে মো. জিল্লুর রহমান এবারও সমর্থন পেয়েছেন।
গতবার আওয়ামী লীগের সমর্থনে বিজয়ী মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মারা গেলে মিছবাহুর রহমান উপনির্বাচনে জয়ী হন। এ জেলা থেকে এবারও তিনি দলের সমর্থন পেলেন, হবিগঞ্জে মো. মুশফিক হুসেন চৌধুরী। এছাড়া গতবার কক্সবাজার জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মোস্তাক আহমদ চৌধুরী এবারও সমর্থন পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন গত ২৩ আগস্ট পার্বত্য তিন জেলা বাদে দেশের ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। আগামী ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন কমিটির সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ওবায়দুল কাদের, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, কাজী জাফর উল্লাহ, রাশিদুল আলম, আবদুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মনি, হাছান মাহমুদ ও আবদুস সোবহান গোলাপ।

নিউজটি শেয়ার করুন..


Leave a Reply

Your email address will not be published.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
22232425262728
2930     
       
    123
       
   1234
26272829   
       
293031    
       
    123
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2021 dainikkushtia.net
Design & Developed BY Anamul Rasel