March 28, 2024, 6:08 pm

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল

রাঙামাটি/অস্ত্র পরিহার করুন, না হলে টিকতে পারবেন না: হানিফ

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, সন্ত্রাস দিয়ে পৃথিবীতে কেউ কোনো দিন শান্তি আনতে পারে নি। অস্ত্র দিয়ে কখনো শান্তি আসে নি। সন্ত্রাস এবং শান্তি একসাথে চলতে পারে না। যারা এখনো অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে রাঙামাটির মানুষকে জিম্মি করে ঘুম হারাম করতে চাচ্ছেন, তাদেরকে অনুরোধ করবো আপনারা অস্ত্র পরিহার করুন। রাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়াবেন না। কারণ রাষ্টের শক্তি অনেক বড় শক্তি। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে। আর না হয় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হবে। তখন টিকতে পারবেন না।
সোমবার (২১ মার্চ) রাঙামাটি শহরের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, যারাই অস্ত্রবাজি করছেন, তারা কোন উদ্দেশ্যে করছেন, কী কারণে করেছেন, তাদের লক্ষ্যটা কী, শুধুই কি চাঁদাবাজি? যারা অস্ত্র নিয়ে মানুষ খুন করে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছেন, তাদের পরিবারকেও নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। এটা কোনো স্বাভাবিক জীবন নয়। অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের নামে যারা মানুষকে জিম্মি করে হুমকি দিচ্ছেন আপনারা দ্রুত অস্ত্র পরিহার করুন। সরকার সুযোগ দিয়েছে কাজে লাগান। এটা তো কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড হতে পারে না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, সন্ত্রাস দিয়ে টিকে থাকা যায় না। এ পৃথিবীর বহুদেশে অনেকে সশস্ত্র বাহিনীর কথা বলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে, তারা কিন্তু নিঃশেষ হয়ে গেছে। কাজেই বলা যায়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে কেউ কোনো দিন টিকে থাকতে পারে না। এখানে কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে টিকতে পারবে না। তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর পাহাড়ি এলাকার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোগ নিয়েছিলেন। শান্তি চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছিলেন, ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর শান্তিচুক্তি হয়েছে। তখনও বিরোধিতা হয়েছে। শান্তি চুক্তি হওয়ার আগে বেগম খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে বললেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারতের অংশ হয়ে যাবে। তারা মিথ্যাচার করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু শান্তিচুক্তির ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুকন্যা অনড় ছিলেন। তিনি জানতেন সন্ত্রাসী বাহিনীকে শান্তির পথে না নিয়ে আসলে স্থিতিশীলতা আসবে না।
হানিফ বলেন, এক সময় কুষ্টিয়া সন্ত্রাসের জনপদ ছিলো। মানুষকে জিম্মি করার জন্য অজস্র বাহিনী ছিলো। সন্ধ্যায় মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারতো না। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৯ সালে তাদেরকে স্যারেন্ডার করিয়েছিলাম। এক হাজার সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করলেও ভালো অস্ত্র তারা লুকিয়ে রেখেছিলো। তারা এখন নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। সরকারের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে টিকে থাকা যায় না। আমি রাঙ্গামাটি জেলার নেতা-কর্মীদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই, এ এলাকার সন্ত্রাসের বিষয়টি আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাবো, যাতে করে সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেয়া হয়।
হানিফ বলেন, জামায়াত এবং বিএনপি দু’টি দলই পাকিস্তানের তৈরি। এই দু’টি দলই বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তারা আমাদের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। আমাদের অগ্রগতিতে তারা বিশ্বাস করে না। তাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডই চালিত হয় দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করতে। মানুষের সাধারণ জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করতে। এটা তারা রাজনৈতিকভাবেও করছে, আবার তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীকে দিয়েও করার চেষ্টা করছে। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আজকের এই জামাতে ইসলামী ১৯৭১ সালে রাজাকার ছিলো। দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য আল বদর, আল শামস গঠন করেছিল। মানুষকে হত্যা থেকে শুরু করে লুটপাট, মা-বোনের ইজ্জতের ওপর হামলা থেকে শুরু করে এমন কোনো ঘৃণ্য কাজ নেই যা তারা করেনি। ২০১৩ সালে যখন বিচারের মাধ্যমে কসাই কাদের মোল্লা, আল বদরের আইনি প্রধান মতিউর রহমান নিজামি, আলী আহসান মুজাহিদদের যখন ফাঁসি হলো, পাকিস্তানের পার্লামেন্টে তখন নিন্দা প্রস্তাব হলো। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলি খান তখন পার্লামেন্টে বললেন, ‘‘মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত কাদের মোল্লা, মতিউর রহমান নিজামি, আলি আহসান মুজাহিদ পাকিস্তানের অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন।’’ আমরা তো অবাক হলাম। একাত্তর সালে না হয় রাজাকার হিসেবে তারা পাকিস্তানের পক্ষের শক্তি ছিল, কিন্তু স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও এরা কি করে পাকিস্তানের সৈনিক থাকে। এই নিন্দা প্রস্তাবের মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হয়, এই দেশে যারা জামায়াতে ইসলামের রাজনীতি করে তারা ’৭১ সালে যেমন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো, এখনো তারা পাকিস্তানের পক্ষে, এখনো তারা রাজাকার-আলবদর হিসেবেই আছে। আর এদেরই দোসর বিএনপি।
গত ১৩ বছরে শেখ হাসিনা দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা গ্রহণের সময় বাংলাদেশ চরম দারিদ্রশীল দেশ ছিলো। আজ আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসবে স্বীকৃতি লাভ করেছি। দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিলো ৪০ লাখ মেট্রিকটন। সেই খাদ্য ঘাটতি পূরণ করছেন শেখ হাসিনা। আজকে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিদ্যুৎ উৎপাদন ২৪ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ পটুয়াখালীর পায়রায় দেশের সর্ববৃহৎ কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন।
পর্যটনে রাঙামাটির সম্ভাবনার কথা ‍তুলে ধরে হানিফ বলেন, এই রাঙামাটি কক্সবাজারের পরে দেশের দ্বিতীয় পর্যটন কেন্দ্র হতে পারতো। কিন্তু তা হলো না। আজকে আমাদের শুনতে হয়, এখানকার মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বাস করছে। বাংলাদেশের মধ্যে এটা তো হওয়ার কথা নয়। এটা যদি পর্যটন নগরী হয়, তাহলে এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি আয়ের শহর হতো। আমার খারাপ লাগছে, আমাদের উন্নয়নের ছোঁয়া রাঙামাটির মানুষের কাছে অধরা মনে হচ্ছে। এখানে সব উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে একটাই কারণ অস্থিতিশীলতা। পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের কারণে উন্নয়ন বাধাগস্থ হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি’র সভাপতিত্বে তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুর সবুর, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। সভা সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মুছা মাতব্বর।

নিউজটি শেয়ার করুন..


Leave a Reply

Your email address will not be published.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
    123
25262728293031
       
   1234
26272829   
       
293031    
       
    123
25262728293031
       
  12345
27282930   
       
      1
9101112131415
3031     
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2021 dainikkushtia.net
Design & Developed BY Anamul Rasel