October 9, 2024, 6:37 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আনা রাশিয়াকে নিন্দা করার প্রস্তাব ব্যর্থ হবার সাথে সাথে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন জেলেনস্কি এমন দাবি করেছে রাশিয়া।
শুক্রবার রাতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইউক্রেনে রুশ হামলার নিন্দা জানাতে খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে উত্থাপিত প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয় ১১ সদস্য দেশ। তবে প্রত্যাশিত ভাবেই বিপক্ষে ভোট দেয় রাশিয়া। অন্যদিকে চীন, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে ভোটদানে বিরত ছিল।
অবশ্য প্রস্তাব উত্থাপনের আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল যে, এ ধরনের প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে পাস হবে না কারণ সংস্থাটির স্থায়ী সদস্যদেশ হিসেবে রাশিয়া ভেটো ক্ষমতার অধিকারী।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম ইউরোপের প্রথম দেশ হিসাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় হামলা শুরু করেছে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টির মতো পড়েছে। এছাড়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চেরনিহিভ, খারকিভ এবং লুহানস্ক সীমান্ত পেরিয়ে হাজার হাজার রুশ সৈন্য স্থলপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েছে।
সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের রাস্তায়ও। শনিবার এক বিবৃতিতে কিয়েভের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মুহূর্তে আমাদের শহরের রাস্তায় রাস্তায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিবৃতিতে শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির জানালার কাছে বা ব্যালকনিতে না যেতে সতর্ক করা হয়েছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, রাশিয়ার বাহিনী রাজধানী কিয়েভ পুরোপুরি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এরপর তারা দেশটির নেতৃত্বকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করবে।
রাজধানী কিয়েভের মাইডান স্কয়ারের কাছে একটি বড় ধরণের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং শহরের ত্রয়েশ্চিনা এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, কিয়েভের ওপর গোলা হামলার শব্দ এতোটাই তীব্র ছিল যে শহরের কেন্দ্র থেকে কয়েক মাইল দূর পর্যন্ত শব্দ পেয়েছেন তারা।
এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রস্তাব মেনে নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শান্তি আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন বলে দাবি করেছে রাশিয়া। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রুশ বার্তা সংস্থা টাসের এক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে।
টাসের খবরে বলা হয়েছে, জেলেনস্কির প্রেস সেক্রেটারি সার্জেই নিকিফোরভ ফেসবুকের এক পোস্টে লিখেছেন, আমরা আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছি, এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছি। ইউক্রেন সবসময় শান্তি ও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত ছিল এবং রয়েছে। এটিই আমাদের স্থায়ী অবস্থান। আমরা রুশ প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব মেনে নিয়েছি।
নিকিফোরভের উদ্ধৃতি দাবি করে খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সমঝোতার জন্য আলোচনার সময় ও স্থান নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে। যত শিগগির আলোচনা শুরু হবে, জনজীবন তত দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার সুযোগ থাকবে।
রুশ প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ এর আগে বলেছিলেন, পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনার জন্য মিনস্কে একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে প্রস্তুত। তিনি দাবি করেছিলেন, তাদের আলোচনা প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনীয় পক্ষ বেলারুশিয়ান রাজধানীর বদলে পোল্যান্ডের ওয়ারশ শহরকে সম্ভাব্য ভেন্যু হিসেবে প্রস্তাব করেছিল, কিন্তু পরে আর যোগাযোগ হয়নি।
অবশ্য ইউক্রেন বরাবরই বলে আসছে, তারা সব সময় আলোচনার জন্য প্রস্তুত। এমনকি, যুদ্ধ বন্ধের জন্য ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে ফোনও করেছিলেন, কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্টই তাতে সাড়া দেননি।
শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেনীয় নেতারাই তাকে রাশিয়ার সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ জানিয়েছেন। কারণ, জেলেনস্কি কয়েকবার পুতিনের কাছে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
Leave a Reply