October 15, 2024, 8:13 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ায় একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়ে সবার প্রশংসায় সুখের আনন্দে ভাসা দম্পতিটি এখন শোকের সাগরে নিমজ্জিত। একে একে পাঁচ সন্তানকেই হারাতে হলো তাদের। এভাবে পাঁচটি সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তারা।
২ নভেম্বর কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের তত্বাবধানে কুষ্টিয়ায় ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তিনি একসঙ্গে জন্ম দেন ৪টি মেয়ে ও একটি ছেলে শিশু।
এর মাঝে ১০ নভেম্বর ৬ ঘন্টার ব্যবধানে ছেলে শিশুটি সহ মোট দুটি মেয়ে শিশু মারা যায়। এরপর ১১ নভেম্বর মারা যায় আরো একটি মেয়ে শিশু। সবশেষ ৬ দিন বেঁচে থাকার সংগ্রাম শেষে অবশেষে আজ (১ঙ১ নভেম্বর) সকালে মারা যায় অবশিষ্ট মেয়ে শিশুটি।
শিশুগুলোর বাবা সোহেল রানা জানান পাঁচ সন্তানের জন্মের পর খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু বুঝতে পারিনি খুশিগুলো এত দ্রত, এত নিষ্ঠুরভাবে হারিয়ে যাবে।
তিনি জানান তার স্ত্রী সাদিয়া আরো বেশী শোকে মুহ্যমান। ভেঙে পড়েছেন তিনি।
সোহেলের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি গ্রামের কলেজপাড়া এলাকায়। তিনি একটি চায়ের দেকান চালান পান্টি বাজারে। ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বহলবাড়িয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে সাদিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন তিনি। এটিই ছিল তাদের প্রথম সন্তান জন্মদান।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসাররা জানান গর্ভধারণের মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে জন্ম হওয়ায় শিশুদের ওজন যথেষ্ট কম হয়। এটাই তাদের বেঁচে থাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে।
“বাচ্চাগুলোর ওজন ছিল ৫০০-৬০০ গ্রাম। এত কম ওজন নিয়ে কোন সদ্যভুমিষ্ঠের বেঁচে থাকা খুবই কঠিন,” জানান ঐ হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মনোরমা সরকার। পাঁচ সদস্যের ডেরিভারি টিমে মনোরমাই নেতৃত্ব দেন।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশরাফুল আলম বলেন তারা চেষ্টার কোন ত্রæটি করেন নি। বরং ডক্তারদের বাড়তি নজর ছিল বাচ্চাগুলোর প্রতি।
তিনি জানান ‘শিশুগুলোর বেঁচে থাকার সর্বশেষ মুহুর্তপর্যন্ত স্ক্যানো ওয়র্ডে আলোর তাপে রাখা হয়েছিল। সবারই অক্সিজেন চলছিল। নিবিড় পর্যবেক্ষণে বোঝা যাচ্ছিল সেখান থেকে বের করলেই তাৎক্ষনিকই অবস্থা বেগতিক হতো। তাদের জন্য বাইরে নিয়ে চিকিৎসা প্রদানও দুরহ ছিল।
অসুস্থতার কারনে সাদিয়ার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
সাদিয়ার পিতা মিজানুর রহমান বলেন পাঁচ সন্তান আসছে জেনে তিনি পাঁচ নাতিদের জন্য তিনি পোশাকসহ প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্র কিনে রেখেছিলেন। তিনি বলেন এটি চরম একটি দুর্ভাগ্য।
শিশুদের ছোট ফুফু রাবেয়া খাতুন বলেন আমরা সবাই ২ নভেম্বর থেকেই হাসপাতালে ছিলাম। আমাদের সকল চেষ্টা ছিল বাচ্চাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখ্রা।
Leave a Reply