December 14, 2024, 9:08 am
জহির রায়হান সোহাগ,চুয়াডাঙ্গা/
চুয়াডাঙ্গায় প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তন্ময় আহমেদ তপু নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে অভিযান চালিয়ে মামলার এজহার নামীয় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, এক এসএসসি পরীক্ষার্থী তন্ময় আহমেদ তপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রোববার রাত ১২টার দিকে নিহতের বড় ভাই মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় আসামী করা হয়েছে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে। এরই মধ্যে ওই মামলায় এজহার নামীয় এক আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু তথ্য দিয়েছে সে। বাকী আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে। মামলাটি খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এজহারে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের নামে বেশকিছু মামলা রয়েছে। তাদের বয়স ১৭ বছরের নিচে। তাদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। তারা কোন দলের নেতার হয়ে কাজ করে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মামলার তদন্ত ও আসামীদের গ্রেফতারের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে না। তবে, শিঘ্রই সুসংবাদ পাওয়া যাবে। এদিকে, নিহত তপুর বন্ধুরা জানান, মূলত একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী এক মেয়ের সাথে তপুর প্রেমের সম্পর্ক। ওই মেয়েকে হকপাড়ার সিহাব নামে এক যুবক পছন্দ করতো। ঘটনার দিন সকালে বিদ্যালয়ের সামনে ওই মেয়ের সাথে কথা বলছিল তপু। এসময় তার সাথে বাগবিতণ্ডা হয় সিহাবের। তপু অনুষ্ঠানের পিছনের বেঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। ওই সময় একটি কালো রঙের (এপ্যাচি ফোর বি) মোটরসাইকেলে তিনজন আসে। শহরের ফার্মপাড়ার ইমন, শিহাব, শান্তিপাড়ার আকাশ ও মুসলিমপাড়ার রূপক এসএসসি পরীক্ষার্থী তপুকে ধারালো রামদা ও চাপাতি দিয়ে প্রকাশ্যে কোপাতে শুরু করে। প্রথমে তারা তপুর মাথায় কোপ দেয়। এতে তপু জ্ঞান হারায়। মাথায় কোপ দেয়ার সময় হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে হাতের একটি কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তপুর। পরে তপুকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এসএসসি পরীক্ষার্থী তপু হত্যার ঘটনায় নিউজবাংলার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশকিছু তথ্য। চুয়াডাঙ্গা শহরের ফার্মপাড়ার ইমন, শিহাব, শান্তিপাড়ার আকাশ ও মুসলিমপাড়ার রূপক কিশোর গ্যাং এর সদস্য। একটি রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের ছত্র ছায়ায় বিভিন্ন অপকর্ম করে তারা। এরআগেও হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে তাদের নাম উঠে আসে। নিহত তপুর বড় ভাই মাসুদুর রহমান জানান, তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তপু ছিল সবার ছোট। সে ছিল খুবই মেধাবী। কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলনা সে। গতকাল সকালে বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে গিয়েছিল সে। সেখানে ওরা আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে। কি কারণে মেরেছে আমরা কিছুই জানিনা। তপুর কোন শত্রুও ছিলনা। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।
উল্লেখ্য, রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা শহরের গুলশানপাড়ায় আল হেলাল ইসলামীয়া একাডেমীতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তন্ময় আহমেদ তপু নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
Leave a Reply