October 10, 2024, 12:47 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় স্থানীয় পর্যায় থেকে দলীয় সুপারিশ না থাকলেও দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙার দায়ে বহিস্কৃত এমন এক যুবলীগ নেতাকে ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। কিভাবে এই নেতা মনোনয়ন পেলেন এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। ক্ষোভ প্রক্রাম করেছেন স্বয়ং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। আর এই বাছাই পর্বে চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা সোহেল রানা পবন। এ ঘটনায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
সোহেল রানা পবন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি ছিলেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙার দায়ে তিনি এবং তার দুই ভাইকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
শনিবার (০৯ অক্টোবর) রাতে ছয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীর চূড়ান্ত মনোনয়নের তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বাহাদুরপুর ইউনিয়নের তিন মনোনয়ন প্রত্যাশী ও দলের নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভেড়ামারা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। সেখানে সভাপতি শামিম আহমেদ ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের বড় ছেলে ও উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি সোহেল রানা পবন ও তার দুই ভাইকে দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙার অপরাধে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সোহেল রানা পবনসহ তিন ভাইয়ের নেতৃত্বে গত ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। সেদিন উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসী হামলা, গুলি ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এখনও সে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মনোনয়ন প্রত্যাশী উজ্জ্বল আহমেদ বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনায় নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ বিষয়টি ভালোভাবে গ্রহণ করছে না। তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপে সাধারণ মানুষ ভয়ে থাকে। তার মনোনয়ন বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি।
এ ঘটনায় দল অনেক পিছিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন মনোনয়ন প্রত্যাশী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান সরোয়ার। তিনি বলেন, ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তিনজনের নাম প্রস্তাব করে। সে অনুযায়ী নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এর বাইরে কীভাবে একজন বহিষ্কৃত নেতা মনোনয়ন পায়? বিষয়টিকে সাধারণ মানুষ ঘৃণার চোখে দেখছে।
মনোনয়নপ্রাপ্ত সোহেল রানা পবন বলেন, আমি মনোনয়ন পেয়েছি। কেন্দ্রীয় নেতারা আমার প্রতি আস্থাশীল, সেজন্যই আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আর আমার বহিষ্কার যুবলীগের গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব রফিকুল আলম চুনু বলেন, সোহেল রানা শৃঙ্খলাবিরোধী সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে বহিষ্কার হয়। বহিষ্কার আদেশ এখনও প্রত্যাহার হয়নি। ওই ইউনিয়ন থেকে শামিম আহমেদ, উজ্জ্বল আহমেদ ও হাসান সারোয়ারের নাম সুপারিশ করে জেলার মাধ্যমে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। অথচ যে মনোনয়ন পেয়েছে তার পক্ষে উপজেলা কমিটির কোনো সুপারিশ ছিল না। পাঠানো তালিকায় তার নাম না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সে মনোনয়ন পেল?
Leave a Reply