October 15, 2024, 9:54 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
দেশে চালের চলতি বাজার স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক এ নিয়ে কোন পরিস্কার ধারনা নেই কারো। ধান ও চালের চলতি মুল্য গড় করেও কোন পরিস্কার ব্যাখা দিতে পারছেন না অনেকেই। তবে এটা পরিস্কার চাল এখন সাধারণ ব্যবসায়ীদের হাতে নেই। এটা চলে গেছে বড় বড় চাল উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানির হাতে।
এই চালের তিনটি প্রকার। অতি সাধারণ মোটা চাল। মিডিয়াম ও প্যাকেটজাত চাল। এসব বহুভিন্নতার কারনে কারণে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। সঙ্গে যুক্ত হ”েছ ব্রান্ডভ্যালু।
যেমন প্যাকেটজাত প্রতিকেজি চাল ব্যান্ডের নামে বিক্রি হ”েছ ৮০-৮৫ টাকায়। যার প্রভাব পড়ছে সাধারণ বাজারে। অখচ এর কোন মানেই নেই।
বিভিন্ন সূত্র বলছে বাংলাদেশের ইতিহাসে ধানের দাম এখন সবচেয়ে বেশি। প্রতি মণ ১২শ টাকারও বেশি। এক মণে ২৫-২৬ কেজি চাল হয়। সেই চাল থেকে ভাঙাচাল আলাদা করা হয়। পরিষ্কার ও ঝকঝকে করা হয় মেশিনে। সেখানেও পরিমাণ কমে। সব মিলিয়ে ২৪ কেজির বেশি পাওয়া যায় না। যুক্ত হয় প্রক্রিয়াজাত খরচও। এখন প্রতিকেজি মোটাচালের উৎপাদন খরচ পড়ে ৩৮ টাকার বেশি। যে চাল পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় ৪২-৪৪ টাকায়। মাঝারি মানেরটা বিক্রি হয় ৪৪-৪৬ টাকায়। প্রতিকেজি মিনিকেট বা নাজিরশাইল পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় ৫২-৫৬ টাকায়। এটাই এলাকাভেদে খুচরা বাজারে ৫৮ টাকা, ৬২ টাকা এবং ৭০ টাকায় বিক্রি হ”েছ। একই চাল বিভিন্ন শপিংমলে বিভিন্ন ব্রান্ডের প্যাকেটে বিক্রি হ”েছ ৮০-৮২ টাকা কেজিতে।
পাইকারি ও খুচরা বাজারের মধ্যে চালের দামের এই ব্যবধান সম্পর্কে সাধারণ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এখন চালের ব্যবসা করছে সিটি গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, প্রাণ আরএফএল গ্রুপ, এসিআই গ্রুপ, রূপচাঁদা গ্রুপ। তাদের উৎপাদন খরচ বেশি। দাম পড়ে ৮০-৮২ টাকা। এ কারণে যেটি প্যাকেটজাত করা হয় না সেটা ৭০-৭২ টাকায় তো বিক্রি হবেই।
ওদিকে বিশেষজ্ঞগণ বরছেন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। তাই চালের দাম বাড়লেও অনেকের গায়ে লাগে না। নিজাম উদ্দিনের মতে, একজন রিকশাচালকের দৈনিক আয় কমপক্ষে ৮০০ টাকা। এমনকি অনেক ভিক্ষুকের আয়ও এমন। এরা একবার চায়ের দোকানে বসেই খরচ করে ৪০-৫০ টাকা। কাজেই, দিনে আড়াইশ গ্রাম চাল খাওয়ার খরচ নিয়ে তাদের তেমন মাথাব্যাথা নেই। এ বিবেচনায় চালের বাজার ঠিকই আছে বলে মত দিয়েছেন অনেকে।
বর্তমান বাজারদরের চেয়ে আরও কমে যদি সাধারণ মানুষকে চাল খাওয়াতে হয়, তবে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে। সরকারের ১০ টাকা কেজি দরের চাল আছে। ৩০ টাকা কেজি দরেরও আছে। এর পরিমাণ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া কম দামে চাল খাওয়ানোর আর পথ আছে বলে মনে হয় না।
তারা জানান সরকার চাল আমদানির অনুমতি না দিলে দাম আরও বাড়তো। আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বাজার ¯ি’তিশীল আছে। ধানের দাম আর কমবে বলে মনে হয় না। বড় বড় কোম্পানিগুলোর হাজার হাজার মণ কিনে রাখার সামর্থ আছে। যা সাধারণ ব্যবসায়ীদের নাই। আগে কৃষক ধান বিক্রি করতে না পেরে বাড়ি নিয়ে যেতেন। এখন সেদিন নেই। কোনও কৃষকের ধান অবিক্রিত থাকে না। বড় বড় কোম্পানি কিনে নেয়। দেশে অটো রাইসমিলও বেড়েছে। কাজেই ধানের দাম পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই।
Leave a Reply