October 9, 2024, 9:40 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া ডেস্ক/
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের সম্পর্কে বহুমাত্রিকতা যোগ হলো। দেশটি ঘোষণা করেছে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ঢাকার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করবে। ইতোমধ্যে দেশ দুটি মাসখানেকের ব্যবধানে মোট ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে ঢাকা-মালে; যার মধ্যে প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে চারটি সম্পন্ন হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মেদ সোলিহ। সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে যৌথ কমিশন গঠন (জেসিসি), পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে নিয়মিত বৈঠক, সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে সহায়তা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়। এছাড়া দুই শীর্ষ নেতার আলোচনায় উঠে এসেছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, শুল্ক সহযোগিতা ও দ্বৈত কর পরিহার, বিনিয়োগ, অভিবাসী ইস্যু, মানবসম্পদ ও যুব সম্প্রদায়ের উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও ঔষধ সামগ্রী, কৃষি, পর্যটন, রোহিঙ্গা ইস্যুসহ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সমস্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও প্রশমন। আর এসব বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণেও একমত হয়েছেন দুই শীর্ষ নেতা।
বাংলাদেশের জোড়া উদযাপনে অংশ নিতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে ফার্স্ট লেডি ফাজনা আহমেদ ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্ৰী আব্দুল্লাহ শহিদ ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্ৰীসহ মোট ২৭ জন অতিথি ঢাকায় আসেন।
জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দশ দিনের আয়োজনের সূচনার দিনে বক্তব্য দিয়েছিলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর জীবন বাংলাদেশকে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।
বন্ধুর পথ পেরিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন সোলিহ। তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতার কথাও। করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে বাংলাদেশ যে সাহায্য মালদ্বীপকে করেছে, সে কথা তুলে ধরে সোলিহ বলেন, মালদ্বীপ বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্বের জন্য কৃতজ্ঞ। এ বন্ধুত্ব মহামারি সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের সাহায্য করছে। এ সহযোগিতা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি নিদর্শন।
বেসরকারি হিসেব বলছে, মালদ্বীপে বর্তমানে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি কর্মী রয়েছে। তাদের বেশিরভাগই দেশটির নির্মাণশিল্পে কাজ করছেন। তবে সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশটিতে ৮০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সফররত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানেও আলোচনা হয় কানেকটিভিটি বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে।
এদিকে দুই দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সভাপতি পদে মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন নিশ্চিত করা হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের আঞ্চলিক পরিচালক পদে ২০২৩ সালের জন্য বাংলাদেশি প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন দেবে মালদ্বীপ।
Leave a Reply