October 10, 2024, 2:07 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ ও কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা কে নিয়ে ‘বিরুপ’ মন্তব্য করার অভিযোগ এনে ডিজিটাল আইনে করা একটি মামলায় ১৭ দিন কুষ্টিয়া কারাগারে বন্দী রয়েছেন পাবনার পাকশী রেলওয়ে কলেজের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাজিবুল আলম। ইতোমধ্যে তাকে ১ দিনের রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানায় দায়ের করা মামলার সূত্রে জানা যায় গত বছর ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে দুবৃত্তদের ভেঙে ফেলা বঙ্গবন্ধুর নির্মাণার্ধীন ম্যুর্যাল নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট দেন পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশী রেলওয়ে কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকের সাদ আহমেদ। তার ষ্ট্যাটাস ছিলো “ঘরে আশ্রিত পোলাও পায়েস অন্নে পালিত কেউটে সাপের বিষ দাঁতে চুর্ন বিচুর্ন জনকের সম্মান। হেফাজতের এই বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে”।
এই ষ্ট্যাটাসে কমেন্টস করেন একই কলেজের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রাজিবুল আলম । তিনি লেখেন “কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মুর্তি ভাঙ্গলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কানাডার বেগম পাড়ার বাদশা মাহবুব উল আলম হানিফের ভাই আতা। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের সামনেই গুলি ফুঠিয়ে মুর্তি ভাঙ্গে আতা ও তার লোকজন। পুলিশ বাধা দেয় নাই। অথচ খুলনা রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি নাহিদুল ইসলামের দাবি এটা স্বাধীনতা বিরোধীদের কাজ ! ¯’ানীয়দের মতে, মুর্তি ভাঙার অভিযোগ তুলে বিরোধী পক্ষের হয়রানি করে আসন্ন পৌর নির্বাচনে একক প্রার্থী হতে আতা পরিকল্পিত ভাবে একাজ করেছেন”।
এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা মো: মিজানুর রহমান মিজু। তিনি ওই পেজটির স্ক্রীন সট সহ গত ডিসেম্বরের ১৪ তারিখে কুষ্টিয়া মডেল থানায় শিক্ষক রাজিবুল আলমের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দ:বি: ২৫(২)/২৯(১)৩১(২) ধারায় মামলা করেন।
শিক্ষক রাজিবুল হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের জামিন পান। জামিন মেয়াদ শেষে তাকে নি¤œ আদালতে হাজির হতে বলা হয়। আদালতের নির্দেশনা মতে রাজিবুল ১৮ ফেব্রæয়ারী কুষ্টিয়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক সৈয়দ হাবীবুল ইসলাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের আদেশ দেন।
গত ৩ মার্চ শিক্ষক রাজিবুলকে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রেজাউল করীমের আদালতে আনা হয়। এ সময় কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক, ঐ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান তদন্তের যুক্তি তুলে ধরে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন । শুনানী শেষে আদালত রাজিবুলের ১ দিনের রিমান্ড মনজুর করেন।
কুষ্টিয়া কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক শাহিনুর রহমান জানান শনিবার তার ১ দিনের রিমান্ড শেষে পুনরায় জেলে পাঠানো হয়েছে।
রাজিবুল আলমের আইনজীবি এ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন তারা নিয়ম অনুসরন করে জামিন আবেদন করবেন। এই মামলায় যাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া হয়েছে তিনি মামলা করেননি। তিনি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেছেন।
শিক্ষক রাজিবুলের স্ত্রী আসমা খাতুন ফোনে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানান। পরে তিনি বলেন তিনি তার স্বামীর জামিন চান।
এদিকে মুল পোস্টা দাতা সাদ আহমেদের ফেসবুক থেকে শিক্ষক রাজিবুলের মন্তব্যটি সরিয়ে নেয়া হযেছে। তার ফেসবুকে রাজিবুলের মন্তব্যটি দেখা যাচ্ছেনা।
Leave a Reply