October 10, 2024, 1:48 am
আসিফ যুবায়ের/
ইতিহাস বহন করছে উওরের যে বিল তার নাম রক্ত দহ। এটি উত্তরাঞ্চলের একটি অন্যতম বৃহৎ বিল। এটি বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলা এবং নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত। তেরটি খাল ও অন্যান্য জলপথ রক্তদহ বিলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত। । ফকির মজনু শাহ এখান থেকেই সশস্ত্র অনুচরসহ প্রায় প্রতি বছর তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধিকারভুক্ত বাংলা ও বিহারের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাতেন। প্রধানত বিহারের পানিয়া অঞ্চল এবং বাংলার রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মালদহ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও ময়মনসিংহ জেলা ছিল তার অভিয়ানের অঞ্চল। ১৭৮৬ সালের আগস্ট মাসে বগুড়া থেকে ৩৫ মাইল দূরবর্তী এক স্থানে লেফটেন্যান্ট আইন শাইনের সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়েছিল। গবেষণায় দেখা গেছে , এ স্থানটি আদমদীঘি থানার রক্তদহ বিল। এখানে ব্যাপক ইংরেজ সৈন্য হতাহত হয়েছিল এবং রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছিল বলে সে সময় এর নাম রাখা হয় রক্তদহ বিল। রক্তদহ বিলে ফকির বাহিনীর একজন শাহাদত প্রাপ্ত মুজাহিদ শায়িত আছেন। এই রক্তদহ মাজারটি স্থানীয় ভাবে ‘রক্তদহ দরগা’ নামে পরিচিত আরেকটি যুদ্ধে মজনু শাহ ও ইংরেজ সৈন্যদের মাঝে যুদ্ধে প্রচুর লোক হতাহত হওয়ায় বিল ভোমরার পানি রক্তের জোয়ারে লাল রং ধারণ করে সেই থেকে বিল ভোমরা ঐতিহাসিক রক্তদহ বিল নাম ধারণ করে আসছে। ঐ যুদ্ধে মজনু শাহ এর একজন শীর্ষ সহযোগী শহীদ হন। তার লাশ ঐ বিলের মধ্যেই একটু উঁচু স্থানে দাফন করা হয়। সেখানে একটি বটগাছ সর্বক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে। ঐতিহাসিক রক্তদহ বিল ফাল্গুনের শুরুতে চারপাশে ইরি-বোরো ধানের আবাদ হয়। প্রায় ৯শত একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃতি এ বিলে একসময় পানি পরিপূর্ণ হয়ে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এ বিল থেকে এলাকায় মাছের চাহিদা পূরণ করে বগুড়া, নাটোর, জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলার দক্ষিণ পূর্ব এলাকার মাছের চাহিদা পূরণ হতো। এ বিলে বোয়াল, চিতল, আইড়, গজার, পবদাসহ মাছের সুক্ষাতি আজও ছড়িয়ে রয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এনজিও সংস্থা ব্র্যাক এই বিলের সংস্কার ও মাছ চাষের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এলাকাবাসীরা বলেন, প্রতি শুক্রবার আসলেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা এখানে ভীড় জমান।
Leave a Reply