September 25, 2023, 9:43 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
রবীন্দ্রনাথের শৈল্পিক সৃষ্টি বিশ্বজুড়ে মানবতাকে অনুপ্রাণিত ও সমৃদ্ধ করে চলেছে : প্রণয় ভার্মা রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রধানমন্ত্রীর ৪ প্রস্তাব ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ/মোংলা-খুলনা রেলপথ চালু অক্টোবর আর্থিক বিষয় নামঞ্জুর/নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না ইইউ চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কমার পূর্বাভাস দিল এডিবি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অনার্স কোর্স স্থগিতের নির্দেশ ইউজিসির নির্বাচন/সারাদেশে কাজ করবে আ.লীগের সুশৃঙ্খল ক্যাম্পেইন টিম চার প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে ৪ কোটি ডিম আমদানি করছে নাইকো মামলা/খালেদার বিরুদ্ধে ৩ বিদেশি কর্মকর্তাকে সাক্ষ্য দিতে অনুমতি আলু-পেঁয়াজ, ডিমের দাম বেঁধে দিলো সরকার, প্রয়োজনে আমদানির সিদ্ধান্ত

দেশের প্রধানতম কবি শামসুর রাহমানের চলে যাওয়ার ১৪ বছর

দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
দেশের প্রধানতম কবি শামসুর রাহমানের চলে যাওয়ার ১৪ বছর আজ। ২০০৬ সালের আজকের এই দিনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আধুনিক বাংলা কবিতার অমর স্রষ্টা শামসুর রহমান ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার মাহুতটুলিতে জন্ম গ্রহ করেন।
তিনি বেঁচে ছিলেন ৭৭ বছর। তাঁর লেখনিতে মনে হয় কবিতাই ছিল তাঁর জীবন। কবিতার মধ্য দিয়েই তিনি জীবনের সকল অনভ‚তি আবেগ প্রকাশ করেছিলেন। দেশ জাতি নিয়ে তার অনুভ‚তি ছিল পরিস্কার। দেশের প্রতি মমত্ববোধ ছিল তাঁর অসীম। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা-উত্তর প্রতিটি আন্দোলনের অব্যক্ত আবেগ-অনুভূতিকে ধারণ করে গোটা জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন কবি শামসুর রাহমান। বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশ দশক থেকে বাংলা কবিতায় যারা উজ্জ্বল উপস্থিতির মাধ্যমে অবদান রেখে গেছেন, কবি শামসুর রাহমান তাদের অন্যতম। পুরান ঢাকায় বেড়ে ওঠার কারণে নগরজীবনের নানা অনুষঙ্গ ও উপকরণ তুলে ধরেছিলেন কবিতায়। কবি জীবনানন্দ-পরবর্তী তিনিই ছিলেন এই ধারার প্রধানতম পুরূষ। পত্রপত্রিকায় লেখা তার চিত্রকল্পময় কবিতার সূত্র ধরে প্রথম গ্রন্থ প্রকাশের আগেই বাংলা কবিতাপ্রেমীদের নজর কাড়েন শামসুর রাহমান।
ষাটের দশকের শুরুর দিকেই তার কবি প্রতিভার বিচ্ছুরণে আলোকিত হতে থাকে সাহিত্যের ভুবন। ‘উনিশ শ’ ঊনপঞ্চাশ’ রচনার মাধ্যমে ১৯৪৮ সালে পদচিহ্ন আঁকেন কবিতার আঙ্গিনায়। সূচনাটা অস্তিত্ববাদী ইউরোপীয় আধুনিকতা দিয়ে হলেও পরে দেশজ সুর ও ঐতিহ্যকে কবিতায় ধারণ করেছেন।
কবির কবিতায় ফুটে উঠেছে নগরজীবনের হতাশা, ক্লেদ, ক্লান্তি, জটিলতা এবং দুঃখ-বিক্ষোভ, শোক ও অপ্রাপ্তি। তিনি শুধু নগর জীবনের রূপকারই নন, বিভিন্ন সংগ্রাম, আন্দোলন, গণমানুষের প্রতিবাদী উচ্চারণ এবং জাতির আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিধ্বনি উঠেছে তার লেখনীতে। গল্প, প্রবন্ধ, কলাম, উপন্যাস, শিশুতোষ রচনা প্রভৃতি তিনি লিখেছেন। কিন্তু তার কাব্যখ্যাতি সব কিছুকে ছাপিয়ে উঠেছে।
শামসুর রাহমান সমকালীন ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে চিরকালীনতার অনুভূতির প্রকাশ ঘটিয়েছেন তার কাব্য ভাবনায়। সাম্প্রদায়িকতা ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যেমন কবিতার ভাষায় প্রতিবাদ করেছেন, তেমনি মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় উজ্জীবিত মানুষকে যুগিয়েছেন প্রেরণা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তার দুটি কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ এবং ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ একই সঙ্গে পাঠক ও বোদ্ধাদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ও সমাদৃত।
তৎকালীন পাকিস্তান আমলে আইয়ুববিরোধী গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব ও পরবর্তী বাস্তবতায় শামসুর রাহমান অস্ত্র হিসেবে বেছে নেন কলমকে। রচনা করেন বহু অনবদ্য কবিতা।
স্বৈরশাসক আইয়ুব খানকে বিদ্রুপ করে ১৯৫৮ সালে সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত সমকাল পত্রিকায় লেখেন ‘হাতির শুঁড়’ কবিতা। সত্তরের নভেম্বরে ভয়াল জলোচ্ছ্বাসের পর মওলানা ভাসানীর পল্টনের ঐতিহাসিক জনসভার পটভূমিতে রচিত ‘সফেদ পাঞ্জাবি’, তারও আগে ‘বর্ণমালা আমার দুঃখিনী বর্ণমালা’, ‘গেরিলা’, ‘কাক’ ইত্যাদি কবিতায় উচ্চারিত হয়েছে এ দেশের কোটি মানুষের কণ্ঠধ্বনি।
ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে জীবন বিসর্জন দেওয়া আসাদকে নিয়ে লিখেছেন ‘আসাদের শার্ট’ কবিতাটি। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন কারাগারে তখন তাকে উদ্দেশ করে লেখেন কবিতা ‘টেলেমেকাস’। সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লিখেছেন ‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’ ও ‘ইকারুসের আকাশ’ সহ অসংখ্য কবিতা।
এর বাইরে সাংবাদিকতা পেশায় দীর্ঘ সময় কাটান তিনি। পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে মর্নিং নিউজে সাংবাদিকতার মাধ্যমে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। এর পর দৈনিক বাংলাসহ বহু জনপ্রিয় পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে গুরত্বপূর্ণ পদ অলঙ্কৃত করেন।
শামসুর রাহমান সাংবাদিক হিসেবে ১৯৫৭ সালে কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক মর্নিং নিউজে। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ সালে সামরিক সরকারের শাসনামলে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। এরপর তিনি অধুনা নামের একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শিল্প-সাহিত্যে অবদানস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯), একুশে পদক (১৯৭৭), স্বাধীনতা পদকসহ (১৯৯১) দেশ-বিদেশের অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেন। রবীন্দ্র ভারতী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি দেওয়া হয়। বাংলাদেশের মানুষের জন্য তিনি আমৃত্যু লিখেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..


Leave a Reply

Your email address will not be published.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
    123
45678910
11121314151617
252627282930 
       
 123456
78910111213
28293031   
       
     12
3456789
24252627282930
31      
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
293031    
       
  12345
6789101112
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2021 dainikkushtia.net
Design & Developed BY Anamul Rasel