September 11, 2024, 2:08 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক//
মিনারুল ইসলাম একজন মিডিয়াকর্মী। বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার একটি ইউনিয়নে। তার মেজো বোনের বাসা ঝিনাইদহ জেলায়। বোনের ৩ টি মেয়ে, বড় মেয়ে এবার ঝিনাইদহ সরকারি গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
অন্য দুই জন ৬ষ্ঠ শ্রেণী ও নার্সারীতে পড়ে।তার দুলাভাই প্রবাসী।
গত ২৭ এপ্রিল থেকে তার বড় ভাগ্নির জ্বর-সর্দি, শ্বাসকষ্ট ( সর্দির কারণে) ও গলা ব্যাথা নিয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। ঐদিন থেকেই তার বোন ও বড় ভাগ্নি সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন। পরবর্তীতে ২৮ এপ্রিল ভাগ্নির করোনা পরীক্ষার নমুনা নেওয়া হয়।
যার রিপোর্ট পাওয়া যায় গতকাল নেগেটিভ। চিকিৎসকেরা টাইফয়েড হয়েছে মর্মে জানায় এবং আরো কিছুদিন হাসপাতালে থাকার পরামর্শ দেয়।
গত ২৭ এপ্রিল থেকে তার ছোট দুই ভাগ্নি ( ১১ বছর ও ৪ বছর) ঝিনাইদহ শহরের তাদের বাসায় অবস্থান করে। উক্ত ৪ দিনে ছোট দুইটি ভাগ্নি যে কতটা আতংক, ভয় ও কষ্টের মধ্যে তাদের বাসায় একাকী অবস্থান করছিলো।
ওখানে নিকটাত্মীয় যারা ছিলেন তারাও ভয় ও আতঙ্কে বাচ্চাদের কাছে যায়নি। ওরা নিজেরাই রান্না করেছে, রাত কাটিয়েছে। পরবর্তীতে করোনা নেগেটিভ জেনে সাংবাদিক মিনারুল ইসলাম গাড়িযোগে বাচ্চা দুটিকে গত ৪ মে সন্ধ্যায় কুমারখালীস্থ তার নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন।
আজ সকালে (মে ৫) হটাৎ, প্রচুর মানুষের চিৎকার শুনে বাসার জানালায় দিয়ে তিনি দেখতে পান অন্তত ৫০০ লোকের বিশাল এক জমায়েত। পরিস্থিতি বোঝার আগেই কয়েকজন তার নাম ধরে চিৎকার করে ডাকছে। তাদের মধ্যে একজনের কাছে তিনি জানতে পারেন তারা এসেছ তার বাসায় ঝিনাইদহ থেকে আগমনকারী ভাগ্নিদের বাসা থেকে বের করে দিতে হবে। না হলে এই তারা বাড়িঘর উচ্ছেদ করে দিবে।
উপস্থিত গ্রাম পুলিশকে তিনি অনুরোধ করেন ১ টা ঘন্টা সময় দেওয়ার। কিন্তু তাকে কোন সময় দেয়া হবেনা মর্মে জানায় গ্রাম পুলিশ। দেরি হলে গ্রামবাসী রাতের বেলায় মিনারুলের ভাগ্নিদ্বয়কে গ্রাম থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় সাংবাদিক মিনারুল ইসলাম অনুনয় বিনয় করলেও তার পরিচিতজন সহ কেউ তার পরিস্থিতি বুঝতে পারে না। কয়েকজন জোড়পূর্বক বাসার মধ্যে ঢুকে পড়তে দরজায় ধাক্কা দেয়। এ সময় তার বাসায় অবস্থানরত তার স্ত্রী, ২ ভাগ্নি ও তার মা গেট বন্ধ করে ভয় ও আতংকে কান্নাকাটি শুরু করে।
মিরারুল তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টা কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাতকে জানায়, এসপি তাৎক্ষণিক তাকে আস্বস্ত করেন ও ওসি কুমারখালীকে নির্দেশ দেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে। পরবর্তীতে কুমারখালী থানার ওসি, তাৎক্ষণিক বাশগ্রাম ফাড়ির ওআইসিকে নির্দেশনা দেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য।
পরবর্তীতে পুলিশের তাৎক্ষণিক সহযোগিতায় উদ্ভট পরিস্থিতি থেকে সে ও তার পরিবার রক্ষা পান।
করোনার এই পরিস্থিতিতে এরকম অমানবিক ঘটনা প্রায়শই ঘটে চলেছে। অহেতুক সন্দেহ বা ধারণার গ্রামের মোড়ল মাতব্বরেরা এসব পরিস্থিতে সৃষ্টিতে জনসমাগমের মাধ্যমে এলাকায় ভীতি সৃষ্টি করছে। প্রশাসনের উচিত এসকল বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারন জনগনের ও আক্রান্তের পরিবারের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ না করা।
Leave a Reply