March 26, 2023, 3:23 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
নিখোঁজের ২ দিন পর রুপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের এমডির গাড়ি চালকের লাশ উদ্ধার নৃশংস গণহত্যার সেই ২৫ মার্চ আজ ‘ইবির গুচ্ছে যাওয়া না যাওয়া/ দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে বিপাকে পড়বে নতুন বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া মাগুরায় সড়ক দূর্ঘটনায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত শুরু হলো মুসলামান স¤প্রদায়ের মহিমান্বিত মাহে রমজান, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর বাণী গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী খোকসায় আড়াই হাজার কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে পাট বীজ বিতরণ দেশের কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি বারের সমস্যা মেটাতে সিনিয়র আইনজীবীদের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেন প্রধান বিচারপতি রমজান জুড়ে মাধ্যমিকে ছুটি, প্রাথমিকে ক্লাস ১৫ দিন

করোনা: ঝিনাইদহে বিয়ে ও নববর্ষের অনুষ্ঠান বন্ধ, ফুল নিয়ে হতাশায় সোলা শিল্পের শ্রমিকরা!

প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের জন্যই সোলার কারখানা কারখানা প্রতিষ্ঠা

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা: বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে সোলা পল্লীর কারিগররা সকল প্রস্তুতি শেষ করেছিলেন। ঘরে সাজিয়ে রেখেছেন সোলার তৈরী থোকা থোকা ফুল, কিন্তু বিক্রি নেই। এছাড়া বিয়ে বাড়িতেও এই ফুলসোলা ব্যবহুত হতো। মহাজনেরা বলেই দিয়েছেন আপাতত মাল পাঠাবেন না। এই অবস্থায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের নরদিহী গ্রামে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র এই শিল্পের প্রতিবন্ধী ও নারী শ্রমিকরা তাদের পারিশ্রমিক (বেতন) পাচ্ছেন না।

স্থানিয় ভাবে এই শিল্পটির বর্তমান পরিচালক তোফায়েল হোসেন জানান, দেশের এই পরিস্থিতিতে সবকিছু যেমন স্থবির হওয়ায় তার শিল্পটিও মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হতে চলেছে। বৈশাখ উপলক্ষে তৈরী করা মালামাল বাড়িতেই পড়ে আছে। মহাজনেরা নতুন করে মাল নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন, এমনকি বকেয়া টাকাও দিচ্ছেন না। এই অবস্থায় কি করবেন, আর কিভাবে অসহায় প্রতিবন্ধী ও নারীদের পারিশ্রমিক দেবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তোফায়েল হোসেন জানান, ২০০৪ সালে তার ভগ্নিপতি প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলাম এই সোলার কারখানা গড়ে তোলেন। নাম দেন রিগ্যাল হ্যান্ডিক্রাফ্টস এন্ড ড্রাই ফ্লাওয়ার। সিরাজুল ইসলামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ গ্রামে। তিনি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নরদিহী গ্রামে এই কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কয়েক বছর তাদের কারখানায় শতাধিক শ্রমিক ফুল তৈরীর কাজ করতেন। যাদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন প্রতিবন্ধী ছিল। সিরাজুল ইসলাম প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের জন্য বাড়িতে এই কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। যারা বসে বসে কাজ করতে পারতেন। বর্তমানে সিরাজুল ইসলাম অসুস্থ হওয়ায় কারখানা তিনি দেখাশুনা করেন।

তোফায়েল হোসেন জানান, বর্তমানে কারখানায় ৩০ জন কাজ করেন। যারা সোলা দিয়ে ফুল তৈরী ও ফুলের মালা গাথার কাজ করেন। বিভিন্নএলাকা থেকে সোলা সংগ্রহ করে সেটাকে কেটে ফুল তৈরীর উপযোগি করেন। এরপর মালা তৈরী। অনেকে কারখানায় আবার অনেকে তাদের এখান থেকে সোলা নিয়ে বাড়িতে বসেই ফুল তৈরী করছেন। তিনি জানান, প্রায় ৪০ প্রকারের ফুল ও ফুলের মালা তারা এই সোলা দিয়ে তৈরী করে থাকেন। গ্রামীন ঐতিহ্য ধরে রাখতেও এই সোলা ফুলের কদর বেশী। তিনি জানান, ফুল তৈরীর ক্ষেত্রে প্রথমে সোলা কেটে কাগজ তৈরী করে সেটাকে রোল বানানো হয়। তারপর বেলী, জিনিয়া, গোলাপ, ছোট গোলাপ, গোলাপকুড়ি, গন্ধরাজ, রজনীকুড়ি, জিরোফুলসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল তৈরী করেন। এগুলো সারা বছর চাহিদা থাকলেও পহেলা বৈশাখে চাহিদা দ্বিগুন বেড়ে যায়। যে কারনে তারা এই সময় অতিরিক্ত পরিশ্রম করে ফুল তৈরী করেন। ঘরে মজুদ করেন নানা ধরনের ফুল। যা দিয়ে সাজবে বাংলার তরুন-তরুনীরা, বরণ করবে বাংলা নববর্ষকে। নববর্ষের মুহুর্তে বেলী, জুই, জিনিয়া, পদ্ম, গন্ধরাজ ফুলের চাহিদার যেন শেষ থাকে না।

তোফায়েল হোসেন জানান, এবারও বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে তারা অতিরিক্ত ফুল তৈরী করেছেন। ইতিপূর্বে বছরের অন্য সময়ে মাসে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। কিন্তু দেশে চায়না ফুলের আগমন ঘটায় তা কমে মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু নববর্ষের সময় বিক্রি হয় লক্ষাধিক টাকার ফুল। এবারও তারা লক্ষাধিক টাকার ফুল মজুদ করেছেন। কিন্তু কোনো বিক্রি নেই।

তোফায়েল জানান, তারা এগুলো ঢাকায় পাঠান। সেখানে রং করার পর বিক্রি হয়। অনেক সময় দেশের বাইরেও যায়। কিন্তু এখন ঢাকার মহাজনরা মাল পাঠাতে নিশেষ করেছেন। সরকারি ভাবে পহেলা বৈশাখ এর সকল অনুষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। ফলে তাদের এই মাল আর বিক্রি হবে না। যারা তার কারখানায় কাজ করেন তাদের পারিশ্রমিক দিতে পারছেন না। ইতিমধ্যে ৩৫ হাজার টাকা বকেয়া হয়ে গেছে। মাস গেলেই তাদের ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়। টাকা দিতে পারছেন না, তাই অনেকে কাজ ছেড়েও দিচ্ছেন। কারখানায় কাজ করছিলেন তুলি বেগম। তিনি জানান, সংসারে কাজের পাশাপাশি এই সোলার ফুল তৈরীর কাজ করেন। এখান থেকে মাস শেষে যে ৩ থেকে ৪ হাজার আয় হয় তা স্বামীর অসচ্ছল সংসার সহায়ক হয়। এখন মালামাল বিক্রি না হলে মালিক কিভাবে টাকা দেবেন। আর তাদের এই কাজ বন্ধ হলে আবারো সংসার অভাব দেখা দেবে।

চায়না খাতুন জানান, তাদের এটি ক্ষুদ্র শিল্প হলেও এর সঙ্গে বেশ কয়েকটি পরিবার জড়িয়ে আছে। যারা বাড়িতে অন্য কাজের পাশাপাশি এই কাজ করে সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়েছেন। এই কাজটি বন্ধ হলে অন্য কাজেও যেতে পারবেন না। ফলে সরকারের এই ক্ষুদ্র শিল্পটি বাঁচিয়ে রাখার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

তোফায়েল হোসেন জানান, আন্তজার্তীক প্রতিবন্ধী দিবসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত মেলায় তাদের এই সোলা শিল্প নিয়ে বেশ কয়েকবার স্টল দিয়েছেন। জাতীয় পর্যায়ে পুরষ্কারও পেয়েছেন। কিন্তু সরকারি কোনো সহযোগীতা আজও পাননি। অর্থের অভাবে কারখানাও বড় করতে পারছেন না। সহজ শর্তে ঋন পেলে কারখানা আরো বড় করে অনেকের কর্মসংস্থান করতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন..


Leave a Reply

Your email address will not be published.

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

MonTueWedThuFriSatSun
  12345
6789101112
2728293031  
       
  12345
2728     
       
      1
3031     
   1234
19202122232425
       
293031    
       
    123
45678910
       
  12345
27282930   
       
14151617181920
28      
       
       
       
    123
       
     12
31      
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
3031     
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
242526272829 
       
© All rights reserved © 2021 dainikkushtia.net
Design & Developed BY Anamul Rasel